কালীপুজোর
আগে কি চলবে লোকাল ট্রেন? দিনক্ষণ স্থির
করতে চাইছে রেল
কালী পুজোর আগেই কি চালু হতে পারে লোকাল ট্রেন? লোকাল ট্রেন চালু নিয়ে
রাজ্যের সাথে এই নিয়ে শীঘ্রই আলোচনা চাইছে রেল। দুর্গা পুজোর আগেই চিঠি দিয়ে
রাজ্যকে দিনক্ষণ স্থির করে আলোচনায় বসতে আহ্বান জানিয়েছিল রেল। এর আগে
মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, লোকাল ট্রেন
চালু হলে আপত্তি নেই। যদিও রেলের তরফ থেকে জানানো হয়, রাজ্য
আগে তাদের চিঠি দিক। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন
বন্দ্যোপাধ্যায় রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন। তার পরে শুরু হয় রেল ও
রাজ্যের মধ্যে আলোচনা। শেষমেষ চালু হয় মেট্রো। লোকাল ট্রেন নয়। পূর্ব রেলের তরফ থেকে এর আগে চিঠি দেওয়া হয়, তারা দক্ষিণ পূর্ব রেল
ও মেট্রো রেল একসাথে আলোচনায় বসতে চায়। যদিও মেট্রো রেলের সাথে পরিষেবা চালু নিয়ে
আলোচনা হয়। রেল ও রাজ্যের যৌথ আলোচনায় মেট্রো পরিষেবা নিয়ে জট কেটে যায়। এর ফলে গত
১৪ সেপ্টেম্বর থেকে চলেছে মেট্রো রেল। এবার চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে লোকাল
ট্রেনের।
দক্ষিণ পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার সঞ্জয় মোহান্তি আগেই জানিয়েছেন, "ইতিমধ্যেই রেলের
তরফ থেকে নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আর পি এফ বিভিন্ন প্রস্তুতি
নিচ্ছে। মেট্রোতে যেমন ভিড় হয়
তার চেয়ে অনেক বেশি ভিড় হয় লোকাল ট্রেনে। শহর ও শহরতলির স্টেশনে ঢোকা-বেরনোর জন্য
একাধিক গেট রয়েছে। ফলে কোভিড প্রটোকল মেনে যাত্রী নিয়ন্ত্রণ করা একটি কঠিন কাজ৷ ফলে
রেল ও রাজ্য একসাথে আলোচনায় বসে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।" এরই মধ্যে প্রতিদিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে স্টাফ স্পেশাল নিয়ে যে সমস্যা
হয়েছে তাতে চিন্তিত রেল। ইতিমধ্যেই স্টাফ স্পেশালে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা
হয়েছে। এরই রেশ ধরে লোকাল ট্রেন চালু করতে চেয়ে রাজ্যের সাথে আলোচনা চাইছে রেল।
পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার সুনীত শর্মা জানিয়েছেন, মেট্রোর যাত্রী সংখ্যার
সঙ্গে লোকাল ট্রেনের যাত্রীর সংখ্যার তুলনা চলতে পারে না। তাছাড়া হাওড়া, শিয়ালদহ, আসানসোল, মালদা
ডিভিশনের মতো ওপেন লাইন হওয়ায় সেখানে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা সহজ নয়। কারণ, স্টেশনে একাধিক ঢোকা বেরনোর রাস্তা আছে। বহু জায়গায় নির্দিষ্ট কোনও রাস্তা
নেই। এই সব জায়গায় ভিড় নিয়ন্ত্রণ তাই ভীষণ কষ্টসাধ্য। ফলে মেট্রোতে প্রযুক্তির
ব্যবহার ও অন্যান্য দিক খতিয়ে দেখা হয়েছে। তবে রাজ্যের সাথে কথা বলে পূর্ব রেল
দুরত্ব বিধি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তার পরেই ঠিক হবে লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু হবে
কবে থেকে। তার জন্যেই দ্রুত আলোচনায় বসা জরুরি।
প্রাক্তন রেল আধিকারিক সুভাষ রঞ্জন ঠাকুরের মতে, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার
বলছেন রাজ্য সরকার চাইলে লোকাল চালানোর কথা ভাবা যাবে।
তারপর দূরত্ববিধি। যদি ট্রেনে সবাইকে ওঠার অনুমতি দেওয়া হয় তবে কোনোমতেই তা মেনে
চলা সম্ভব নয়। কম ট্রেন চললে বাজারের মত ভিড়ে ঠাসাঠাসি হবে। দূরত্ববিধি শিকেয়
উঠবে। রেল কর্তৃপক্ষের এমন পরিকাঠামো নেই যে দূরত্ববিধি মানা সম্ভব হবে। তবে মাস্ক
পরা আবশ্যিক করতে পারে। এমনিতেই বহু লোক মাস্ক পরেন না বা পরলেও থুতনিতে নামিয়ে
রেখে দেন।ট্রেনেও তাই হবে। তাই প্রথমে বিশেষ পাস দেওয়ার ব্যবস্থা করা দরকার ।
রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কর্মচারীরা, সরকারী ও বেসরকারী
স্বাস্থ্যকর্মীরা, পুরসভা , ব্যাঙ্ক ,সাংবাদিক ও অন্যান্য জরুরি কর্মীদের পরিচয়পত্র দেখালে তবেই ট্রেনে উঠতে
দেওয়া হবে।"
তাঁর কথায়, "কারা জরুরি কর্মী সেটা ও কত ট্রেন কীভাবে চলবে ঠিক
করার জন্য রেল কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য সরকারের মিটিং করা দরকার। রেল কর্তৃপক্ষ যদি আইন
শৃঙ্খলার ব্যাপারে কোন সাহায্য চান সেটাও আলোচনা হোক।সবগুলো বিষয়ে সুষ্ঠু আলোচনা
ছাড়াই ট্রেন চালানো ঠিক হবে বলে মনে করি না। ’’
0 Comments