আগামী বছরের মাধ্যমিকের প্রশ্নে অপশনের সংখ্যা বাড়ছে, আর কি কি বদল?

২০২১ এর মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র কেমন হতে চলেছে? তা নিয়েই এবার পরিকল্পনা শুরু করে দিল রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তর ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। ইতিমধ্যেই আগামী বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষায় করোনা পরিস্থিতিতে মাথায় রেখে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ সিলেবাস কাটছাঁটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কতটুকু পড়ানো হয়েছে এবং তার ওপর কী কী  ধরনের প্রশ্নপত্র থাকবে তা নিয়েও ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে একাধিক পরিকল্পনা করতে শুরু করেছে রাজ্য। মূলত ছাত্র-ছাত্রীদের এবারের প্রশ্নপত্রে একাধিক অপশন দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর।

সূত্রের খবর ইতিমধ্যেই ক্লাসরুমে যে যে বিষয়গুলি পড়ানো হয়ে গিয়েছে তার ওপর থেকেই বেশি প্রশ্ন রাখার পক্ষপাতী স্কুল শিক্ষা দপ্তর ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। যদিও ডিসেম্বর মাসে যদি স্কুল খুলে তাহলে সেই বিষয়গুলি পরিয়ে নিয়ে তার ওপরও প্রশ্ন রাখা থাকবে।তবে সেটি হবে সংখ্যায় কম। তবে প্রশ্নপত্রের ধাঁচের কোন পরিবর্তন করতে চাইছেনা স্কুল শিক্ষা দপ্তর এমনটাই সূত্রের খবর। যদিও এই বিষয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়।

আগামী বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ঠিক কী ধরনের বদল চাইছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও স্কুল শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা তা দেখে নেওয়া যাক:


১) একাধিক অপশন থাকবে ছাত্রছাত্রীদের কাছে প্রশ্নের। অর্থাৎ যেখানে প্রত্যেক বছরই সাধারণত দশটার মধ্যে সাতটি বা ১৫ টির মধ্যে ১২ টি প্রশ্নের উত্তর করতে বলা হয় সেখানে অপশন এর সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও স্কুল শিক্ষা দপ্তর। অর্থাৎ একাধিক অপশন থাকবে ছাত্রছাত্রীদের কাছে তার মধ্যে থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রশ্নের উত্তর করতে বলা হবে।

২) যে অধ্যায়গুলি ইতিমধ্যেই পড়ানো হয়ে গেছে সেই অধ্যায়গুলি থেকেই যাতে বেশি প্রশ্ন রাখা যায় সেই বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় স্কুল খুললে যে অধ্যায় গুলি পড়ানো হবে বলে মনে করা হচ্ছে সেই অধ্যায়গুলি থেকেও প্রশ্ন দেখা হবে তবে সব মিলিয়ে সব অধ্যায় থেকেই কমবেশি প্রশ্ন রাখার চিন্তাভাবনা নেওয়া হয়েছে।

৩) মূলত multiple-choice টাইপ বা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের অপশনের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

৪) ইতিমধ্যেই যে প্রস্তাব জমা পড়েছে সেখানে বলা হয়েছে স্কুল খুলে ক্লাস করিয়েই এই মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়ার। সেক্ষেত্রে প্রথম সামেটিভ এর অন্তর্গত বিষয়গুলি ইতিমধ্যেই পড়ানো হয়ে গেছে গত মার্চ মাসের মধ্যেই।যদি স্কুল খুলে তাহলে দ্বিতীয় সামেটিভ এর বিষয়গুলি পড়ানো হবে। সেক্ষেত্রে যে বিষয়গুলি পড়ানো হবে না বা শেষপর্যন্ত বাদ পড়ে যাবে সেই বিষয়গুলি থেকেও খুব কম সংখ্যক প্রশ্ন রাখার চিন্তাভাবনা রাখা হয়েছে। কারন সে ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের বলা হবে তারা যদি নিজেদের মতো প্রস্তুতি নিয়ে রাখে তাহলে সেক্ষেত্রে তারা ওই প্রশ্নগুলি থেকেও উত্তর করতে পারবে।

৫) তবে প্রশ্নের ধাঁচের বা গত কয়েক বছর ধরে যেভাবে প্রশ্নপত্র হয়ে এসেছে সেই নাচের কোন পরিবর্তন চাইছে না মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বা স্কুল শিক্ষা দপ্তর।

তবে শুধু মাধ্যমিক নয়, উচ্চমাধ্যমিক ও ঠিক একই নিয়মে প্রশ্ন করতে করতে চায় রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তর। করোনা পরিস্থিতির জেরে গত মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই রাজ্যজুড়ে স্কুল বন্ধ রয়েছে। অনলাইন ক্লাস হলেও গ্রাম অঞ্চলের দিকে অনলাইন ক্লাস খুব একটা সদর্থক ভূমিকা পায়নি বলেই মনে করেছেন দপ্তরের আধিকারিকরা। তাই ইতিমধ্যেই ক্লাস চালুর পক্ষে সওয়াল করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এখনও পর্যন্ত কবে মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে তার সম্ভাব্য সূচি ঘোষিত হয়নি। যদিও মার্চ ও মে-জুন মাস এই দুইয়ের সময়ের কথা মাথায় রেখেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ কার্যত প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সূত্রের খবর।